সংবাদচর্চা অনলাইনঃ
নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা খানপুর হাসপাতালে টেন্ডার আর চিকিৎসা নিয়ে যেই পরিমান চুরি হয়েছে তা আমি আমার জন্মে আর কখনও দেখিনি। এখানে একটি চক্র নিজেদের অমুক তমুকে পিএ পরিচয়ের সুযোগে কোটিপতি হয়েছে। হাসপাতালের সকল দায়িত্বে আমার উপর থাকার পরেও আমি এদের কাছে অসহায়। কখন টেন্ডার হলো, কারা টেন্ডার পেলো, কোনকিছু সম্পর্কেই আমি অবগত না। পরে ফাইলপত্র ঘেটে দেখলাম শুধু চুরি নয়, পুকুর চুরি হয়েছে। আমি ঘোষণা দিচ্ছি দ্রুত ভিত্তিতে অডিট রিপোর্ট করে এদের দুদকের হাতে তুলে দেয়ার জন্য।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুর ২টায় খানপুর ৩০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট উদ্বোধন কালে এমন মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই সাংসদ। এসময় করোনা কালে হাসপাতালকে ঘিরে যারা দুর্নীতি চালিয়েছে তাদের ছাড় দেয়া হবেনা বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সেলিম ওসমান বলেন, একজন দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাকে রাজশাহীতে বদলী করে তাকে বাঁচিয়ে দেয়া হয়েছে। তার কৃতকর্মের শাস্তি দেখতে চায় নারায়ণগঞ্জের মানুষ। প্রয়োজনে তাদের দুর্নীতি থেকে ক্রয়কৃত সম্পদ বিক্রি করে হাসপাতালের উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে। একদিকে করোনা যোদ্ধারা নিজেরা আক্রান্ত হয়েও যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে যান নি। অন্যদিকে চোরের দল পুরো হাসপাতালকে শেষ করে দিচ্ছে। আমরা দুই ভাই নারায়ণগঞ্জে বেঁচে থাকতে এদের ছাড় দিব না।
তিনি বলেন, আজ থেকে ১০ শয্যার যেই আইসিইউ চালু করা হলো আমরা তা পর্যায়ক্রমে ৫০ শয্যায় উন্নীত করবো। একই সাথে মন্ত্রনালয়ের অনুমতি ক্রমে হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় নিয়ে যাবার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। এই কাজটি সফলভাবে করতে পারলে নারায়ণগঞ্জে মেডিকেল কলেজ করা সম্ভব বলে প্রধানমন্ত্রী আমাকে জানিয়েছে। সুতরাং আমরা সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন বলেন, আইসিইউ সেবা শুধু চালু করলেই হবে না। এর রক্ষণাবেক্ষণও অনেক জরুরী। কোন একজন দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা যদি কোন গুরুত্বপূর্ন সার্কিট খুলে রেখে বলে আইসিইউ নষ্ট তাহলে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবেনা নারায়ণগঞ্জের মানুষ। কারণ সে অন্য বেসরকারী হাসপাতালের সাথে চুক্তিবদ্ধ। এই বিষয়গুলো থেকে সকলের বের হয়ে আসা প্রয়োজন। আমরা আশা করবো নারায়ণগঞ্জে কোন হৃদরোগীকে আর ঢাকায় যাবার প্রয়োজন হবে না। এই খানপুর হাসপাতালেই সর্বোচ্চ সেবা পেয়ে যাবেন তারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সামসুজ্জোহা সঞ্চয় এর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ গৌতম রায়, করোনা প্রতিরোধ কমিটির ফোকাল পার্সন ডাঃ জাহেদুল ইসলাম।